Wednesday, September 19, 2012

আমার আমি ...

(লেখাখানা কুন্তলাদির 'নিজ ঢাক অগত্যা নিজেই' থেকে বিপুলভাবে অনুপ্রানিত)
আমি কে?
তাইতো, আমি কে? 'আমি কে' জানতে গিয়ে কত মহীরুহ কুপোকাত হয়ে গেলেন, আর তুচ্ছ 'আমি' ঠিক করতে বসলাম 'আমি কে'? আঁতলামো হচ্ছে? সেসব ঠিক করার জন্য 'কাঁচা আমি পাকা আমি' খ্যাত রামকেষ্ট পরমহংস বা 'তত্ত্বমসি' খ্যাত উদ্দালক মুনি তো আছেনই। আমি বরং এইবেলা বলে ফেলি আমি কে। আমি হলাম গিয়ে আবির দাস। না না, যা ভাবছেন তা নয়। আমি বসন্তকালে জম্মাইনি। সে পৌষের শীতে কাঁপতে কাঁপতে আমার এ ধরাধামে আগমন। আমার মাতৃদেবীর নামটা খুব পছন্দ হওয়ায় শীতের ঝরাপাতা হয়ে গেল বসন্তের কোকিল। অবশ্য ‘পুন্ডরীকাক্ষ পুরকায়স্থ’ বা ‘দীপমালা বসুরায়চৌধুরী’ লিখতে যেসব বীর/বীরাঙ্গনাদের হাত ব্যথা হয়ে যায়, তাদের কাছে আমি বেশ হিংসার পাত্র। বাংলায় ৫ খানা আর ইনজিরিতে ঠিক ৭ খানা বর্ণ লিখলেই শান্তি।
কোথায় থাকি?
কোথায় আর থাকব? ঘরেই থাকি। বড্ড বাজে একটা পি.জে. হলো। যাকগে যাক। থাকা শুরু করেছিলাম, ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ নামক অঙ্গরাজ্যটির, বীরভূম জেলাস্থ কীর্ণাহার নামের একটি গঞ্জে। নিরক্ষরতা দূরীকরণ থুড়ি মাধ্যমিক পাস করার পর এলাম কলকাতা। কলকাতা ও শহরতলি ঘুরে হোস্টেল, মেস ও পেয়িং গেস্ট এর অমূল্য সব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে বেশ দিন কাটছিল। এমন সময় কাল হলো এঁড়ে গোরু কিনে। পাড়াগেঁয়ে ভূত চলে এলাম পি.এইচ.ডি. করতে।এখন পরে আছি স্যাম চাচার দেশে, রিভারসাইড, ক্যালিফোর্নিয়ায়।
কি করি?
গোরু খুঁজি। ঐ মানে গবেষণা করি। যন্ত্রগণককে মানুষের বিকল্প হিসেবে তৈরী করার যে বিপুল প্রচেষ্টা চলছে তাতে একটু অবদান রাখার চেষ্টা করছি। গোদা বাংলায় বললে, কম্পিউটার ভিশন সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রিভারসাইডে (বেশ আনন্দবাজার মার্কা হলো না কথাটা? ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া কে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়াটা?)।
কি খাই?
যা পাই। তবে যেকোনো বাঙালির মতোই মাছের নিদারুন ভক্ত।
কি পরি?
বাইরে সাধারণভাবে জিন্স, টি-শার্ট আর ঘরে বারমুডা আর তার সাথে টি-শার্ট/পাঞ্জাবি। শার্ট পরার অভ্যেসটা একদমই চলে গ্যাছে বললে ভুল বলা হবে। মূলত দুটি কারণে ওই অভ্যেসটি এখনো বজায় আছে - ১. কাচার ল্যাদ না কাটিয়ে উঠতে পারায় টি-শার্টের ভান্ডার ফুরোনো এবং ২. দু-একটি সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে শার্ট না পরে গেলেই নয়। আর হ্যাঁ, স্কুল-কলেজের মত হাওয়াই চটি বা স্যান্ডল পরার অভ্যেসটা চলে গ্যাছে।পা এখন  বেশিরভাগ সময় স্নিকারেই ঢাকা থাকে।
কি পড়ি?
হুম্‌ম, বড় কঠিন প্রশ্ন। বাধ্য হয়ে পেপার পড়ি। কনফারেন্স, জার্ণাল, রিভিউ, খসড়া নানারকম। আর অবাধ্য হয়েও পেপারই পড়ি, এই যেমন আনন্দবাজার, বর্তমান, আজকাল, প্রতিদিন, গণশক্তি সবই। কোনো বাছবিচার না রেখেই। আর পড়ার মধ্যে যেগুলো পড়তে ভালোবাসি তাদের মধ্যে থাকবে, গোয়েন্দা রহস্য, আত্মজীবনীমূলক সাহিত্য, ভ্রমনকাহিনী, ইতিহাস, ঐতিহাসিক উপন্যাস বা গল্প আর রামকৃষ্ণ-শ্রীমা-বিবেকানন্দ সাহিত্য। বিভিন্ন সময়ে আমার পরা কয়েকটি বই নিয়ে ছোটখাটো কিছু এই ব্লগ খাতায় লেখার ইচ্ছে রইলো অবশ্যই।
শখ-টখ কিছু?
অবশ্যই। ছবি তুলতে আর বেড়াতে ভালবাসি। তাই বেড়াতে গেলে রথ দেখার সাথে কলাটাও বেচা হয়ে যায়। আর ভালোবাসি টুকটাক রান্না করতে। এছাড়া সিনেমা দেখা, গান শোনা তো আছেই।
আফসোস?
প্রচুর। ছোটবেলায় 'বড় হয়ে কি হতে চাও' রচনায় লিখেছিলাম সাংবাদিক। সদ্য তখন ক্রিকেট খেলার খুঁটিনাটি শিখছি আর সচিন নামক ভগবানটিকে তৈরী হতে দেখছি। কাগজে দেখছি, একই সাংবাদিক কোনদিন সিডনি তো কোনদিন এজবাস্টন থেকে খেলার বর্ণনা পাঠাচ্ছে। আহা তাদের কি মজা, কত খেলা দেখতে পায়। পরে যখন উপলব্ধি করলাম যে খেলা দেখেই তাদের কাজ শেষ হয়ে যায় না, একটু আধটু লিখতেও হয় তখন আর সাহস পেলুম না। লিখতে বললেই তো গায়ে জ্বর। তার পরের স্টেজ - গোলি মারো সাংবাদিকতা, খেলোয়াড়ই হই না কেন? আমি সচিন আর আমার পাড়ার বন্ধু বিল্টু কাম্বলি, কারণ ও বাঁহাতি। কিন্তু এমনই খেলার মান যে জোর করে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে নামতে হত, আর বল করলেই বিপক্ষের মার আর সপক্ষের করুণ দৃষ্টি। কাজেই সে গুড়েও বালি। তাই বিল্টু ব্যবসায়ী আর আমি এখনও ছাত্র।
দেখি কেমন দেখতে?

1 comment:

  1. amio chhotobelay krira-sangbadik hote chaitam akkale, ebong akdom oi karonei: samne theke sachin er khela, aha!
    riverside to bapok jayga..

    ReplyDelete